স্বদেশ ডেস্ক:
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। আজ মঙ্গলবার তার মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশে মানবাধিকারকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতারা বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাদের মধ্যে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস রয়েছেন, যিনি গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য পরিচিতি। এ ছাড়া মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের দুই নেতাও এ তালিকায় আছেন।’
ভলকার তুর্ক বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস প্রায় এক দশক ধরে হয়রানি ও ভয়ভীতির মুখোমুখি। তিনি বর্তমানে দুটি বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন, যেগুলোতে তার কারাদণ্ড হতে পারে, একটি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং দ্বিতীয়টি দুর্নীতির অভিযোগ।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার বলেন, ‘যেখানে ইউনূসের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ আছে, সেখানে আমরা লক্ষ্য করছি যে, তার বিরুদ্ধে মানহানিকর প্রচারণা অনেক সময়ই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আসছে এবং এতে তার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঝুঁকি আছে।’
বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ ও নিরাপত্তায় কাজ করে যেতে মানবাধিকারকর্মী ও অন্যান্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের জন্য নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ভলকার তুর্ক।
তিনি বলেন, ‘অধিকারের নেতা আদিলুর রহমান খান ও নাসিরুদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে মামলা জাতিসংঘ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, যেগুলোর রায় ৭ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে ১০ বছর আগের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সম্পর্ক রয়েছে।’
যথাযথ প্রক্রিয়া এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে এই মামলাগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যালোচনা নিশ্চিতের আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
বাংলাদেশের নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনটিও জাতিসংঘ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা, ‘নতুন আইনটিতে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানা রাখা হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি অপরাধের জন্য জামিনের সুযোগ থাকবে। তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আটকাতে আইনের স্বেচ্ছাচারী ব্যবহার রোধ করতে সব উদ্বেগের সমাধান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’